ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য (Tropical Cyclone)
ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত(Tropical Cyclone):
ক্রান্তীয় অঞ্চলে সমুদ্র থেকে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ বিশিষ্ট প্রবল বিধ্বংসী ঘূর্ণবাতকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে।
ক্রান্তীয় অঞ্চলে সমুদ্র থেকে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ বিশিষ্ট প্রবল বিধ্বংসী ঘূর্ণবাতকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে।
ক্রান্তীয় অঞ্চলে গ্রীষ্ম ও শরৎকালে সমুদ্রপৃষ্ঠের বায়ু হঠাৎ উত্তপ্ত হলে হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় এবং গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। সংলগ্ন শীতল ও ভারী বায়ু নিম্নচাপ কক্ষের আকর্ষনে কুন্ডলীর মতো পাক খেয়ে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয় এবং পর্যায়ক্রমে উত্তপ্ত ও ঊর্ধ্বগামী হয়ে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি করে।
ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য:
ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
1. অবস্থানঃ নিরক্ষরেখার উভয়পার্শ্বে 5° থেকে 30° অক্ষাংশের মধ্যে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়।
2. উষ্ণ সমুদ্রপৃষ্ঠ: 26° - 27° উষ্ণতা বিশিষ্ট সমুদ্রপৃষ্ঠে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত সৃষ্টি হয়।
3. শক্তির উৎস: জলীয় বাষ্পের লীনতাপ থেকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত শক্তি লাভ করে তাই সমুদ্রের ওপর সৃষ্টি হয়ে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়।
4. গভীর নিম্নচাপ ও সমচাপ রেখার আকৃতি: কেন্দ্রে অতি গভীর নিম্নচাপ থাকে, যা কখনো 880 মিলিবার হয়ে যায়। সমপ্রেষ লেখাগুলি সম্পূর্ণ বৃত্তাকার ও খুব ঘন সন্নিবিষ্ট হয়।
5. প্রবল বায়ুপ্রবাহ: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রমুখী বায়ু প্রবল গতিতে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু ঘন্টায় গড়ে 100-150 কিমি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে 200-400 কিমি পর্যন্ত প্রবাহিত হয়।
6. বিস্তার: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের আয়তন ছোট হলেও ব্যাস সর্বাধিক প্রায় 700 কিমি পর্যন্ত হয়।
7. বায়ু প্রবাহের দিক: উত্তর গোলার্ধে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে অর্থাৎ বামবর্তে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাটার দিকে অর্থাৎ দক্ষিণাবর্তে প্রবাহিত হয়।
8. গতিপথ: আয়ন বায়ু প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়।
9. শান্ত চক্ষু: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে গভীর নিম্নচাপযুক্ত ও মেঘমুক্ত শান্ত আবহাওয়া বিশিষ্ট শান্ত ঘূর্ণবাতের চক্ষু অবস্থান করে।
10. বৃষ্টিপাত: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে বৃষ্টি না হলেও কেন্দ্রের চারিদিকে প্রবল বেগে ঝড়ের সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎসহ একটানা বৃষ্টিপাত হয়।
11. সময়কাল ও স্থায়িত্ব: প্রধানত গ্রীষ্মকাল ও শরৎকালের ক্ষণস্থায়ী ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত সৃষ্টি হয়।
12. সীমান্তের অনুপস্থিতি: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতে সমচাপ রেখাগুলি বৃত্তাকার হওয়ায় কোন সীমান্ত সৃষ্টি হয় না।
13. ব্যারোট্রপিক আবহাওয়া: একই উষ্ণতা বিশিষ্ট বায়ুপুঞ্জের মিলনে গড়ে ওঠে বলে আবহমন্ডলের এই ধরনের সমধর্মিতাকে ব্যারোট্রপিক আবহাওয়া বলে।
14. ধ্বংসক্ষমতা: বিধ্বংসী ক্ষমতা যুক্ত ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতে জীবন ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল –