মৃত্তিকা -অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (Soil SAQ)
![]() |
Soil - SAQ |
1. মাটি কাকে বলে?
উত্তর: শিলাচূর্ণ বা রেগোলিথ ও জৈব পদার্থ মিশে দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের উপর এমন এক শিথিল পদার্থ গঠিত হয় যেখানে উদ্ভিদ প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে, তাকেই বলে মৃত্তিকা।
2. পেডোলজি কাকে বলে?
উত্তর: মৃত্তিকা বিজ্ঞানের যে অংশে মৃত্তিকার উৎপত্তি, উপাদান, স্তরায়ন, ধর্ম ও শ্রেণীবিভাগ প্রকৃতির আলোচনা করা হয় তাকে পেডোলজি বলে।
3. ইডাফোলজি কাকে বলে?
উত্তর: মৃত্তিকা বিজ্ঞানের যে অংশে মৃত্তিকাকে উদ্ভিদের জন্ম, বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয় তাকে ইডাফোলজি বলে।
4. রেগোলিথ কাকে বলে?
উত্তর: আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট শিলাচূর্ণ বিরাজিত শিলার একটি শিথিল স্তরকে রেগোলিথ বলা হয়।
5. মৃত্তিকার জৈব পদার্থ বলতে কী বোঝো?
উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ ও বর্জ্য পদার্থের বিশ্লিষ্ট কঠিন ও জটিল পদার্থকে মাটির জৈব পদার্থ বলা হয়, যার পরিমাণ হল 5 শতাংশ।
6. হিউমাস কাকে বলে?
উত্তর: সূক্ষ্ম জীবাণু দ্বারা উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ ও বর্জ্য পদার্থের বিশ্লিষ্ট কালো বা বাদামী রঙের চটচটে পদার্থকে , তাকে হিউমাস বলে।
7. মৃত্তিকা সৃষ্টির মৌলিক প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: পৃথিবীর যে-কোনো স্থানে যে-কোনো পরিবেশে মৃত্তিকা সৃষ্টির যে প্রক্রিয়ায় গুলি সক্রিয় থাকে, তাদের মৌলিক প্রক্রিয়া বলে।
8. হিউমিফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: সূক্ষ্ম জীবাণুরা উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ, ঝরাপাতা ও অন্যান্য জৈব বর্জ্য পদার্থকে বিয়োজিত ও সংশ্লেষিত করে হিউমাসে পরিণত করে, হিউমাস গঠনের এই প্রক্রিয়াকে হিউমিফিকেশন বলে।
9. এলুভিয়েশন কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হয়ে বা জলে ভাসমান অবস্থায় মাটির নিচের স্তরে স্থানান্তরিত হয় তাকে এলুভিয়েশন বলে।
10. ধৌত প্রক্রিয়া বা লিচিং কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হয়ে মাটির নিচের স্তরে স্থানান্তরিত হয় তাকে ধৌত প্রক্রিয়া বা লিচিং বলে।
11.লেসিভেজ কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে ভাসমান অবস্থায় যান্ত্রিক উপায় মাটির নিচের স্তরে স্থানান্তরিত হয় তাকে লেসিভেজ বলে।
12. কৌশিক প্রক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির নিম্নস্তরের জল ও দ্রবণীয় পদার্থ গুলি মাটির ছিদ্রের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে উপরে উঠে আসে, তাকে কৌশিক প্রক্রিয়া বলে।
13. ইলুভিয়েশন কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হয়ে বা জলে ভাসমান অবস্থায় মাটির নিচের স্তরে সঞ্চিত হয়, তাকে ইলুভিয়েশন বলে।
14. মৃত্তিকা সৃষ্টির বিশেষ প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি নির্দিষ্ট মৃত্তিকা সৃষ্টির যে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকে, তাকে মাটি সৃষ্টির বিশেষ প্রক্রিয়া বলে।
15. পডজোলাইজেশন কাকে বলে?
উত্তর: শীতল ও আর্দ্র নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে আম্লিক গ্রানাইট, বেলেপাথর থেকে ছাই রঙের অম্লধর্মী পডজল মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে পডজোলাইজেশন বলে।
16. ডাফ কাকে বলে?
উত্তর: সরলবর্গীয় অঞ্চলে সূক্ষ্ম শিকড় দ্বারা গঠিত জৈব স্তর বা 'O' স্তরকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ভাষায় ডাফ বলে।
17. মাল কি?
উত্তর: পর্ণমোচী অরণ্যে শিথিল ও মুচমুচে ধরনের জৈব স্তর বা 'O' স্তরকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ভাষায় মাল বলে।
18. সেসক্যুঅক্সাইড কাকে বলে?
উত্তর: লোহা ও অ্যালুমিনিয়ামের জারিত কণাগুলোকে সেসক্যুঅক্সাইড বলা হয়।
19. হার্ডপ্যান কাকে বলে?
উত্তর: পডজল মৃত্তিকায় এলুভিয়েশন প্রক্রিয়া A স্তর থেকে ধাতব ক্যাটায়ন, সেসক্যুঅক্সাইড ও কিছু সূক্ষ্ম পলি B স্তরে চলে আসে। ফলে B স্তরে অপেক্ষাকৃত অপ্রবেশ ও শক্ত হয়ে যায়, একে হার্ডপ্যান বলে।
20. ডিউরিক্রাস্ট কাকে বলে?
উত্তর: উষ্ণ ও আর্দ্র ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটির উপরিভাগে লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড সঞ্চিত হয় যে সিমেন্ট জাতীয় কঠিন লাল স্তর সৃষ্টি হয়, তাকে ডিউরিক্রাস্ট বলে।
21. স্যালিনাইজেশন কাকে বলে?
উত্তর: শুষ্ক ও উষ্ণ মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে সালফেট বা ক্লোরাইড সমৃদ্ধ লবণাক্ত সোলোনচাক মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে স্যালিনাইজেশন বলে।
22. ক্যালসিফিকেশন কাকে বলে?
উত্তর: নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি ও মরু অঞ্চলে ক্ষারধর্মী পেডোক্যাল শ্রেণীর চারনোজেম ও চেস্টনাট মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে ক্যালসিফিকেশন বলে।
23. অ্যালকালাইজেশন কাকে বলে?
উত্তর: মরু জলবায়ু অঞ্চলে সোডিয়াম আয়ন সঞ্চয়ের ফলে তীব্র ক্ষারধর্মী পেডোক্যাল জাতীয় সোলোনেজ মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে অ্যালকালাইজেশন বলে।
24. গ্লেইজেশন কাকে বলে?
উত্তর: জলমগ্ন নিম্নভূমিতে অক্সিজেনের অভাবে বিজারণ প্রক্রিয়া ধূসর রঙের গ্লেই মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে গ্লেইজেশন বলে।
25. ডুকচেভ প্রদত্ত মৃত্তিকা সৃষ্টির উপাদানের সমীকরণ কি?
উত্তর: S = f(cl,o,p,t) হয় ডুকচেভ প্রদত্ত মৃত্তিকা সৃষ্টির উপাদানের সমীকরণ।
26. জেনি প্রদত্ত মৃত্তিকা সৃষ্টির উপাদানের সমীকরণ কি?
উত্তর: S = f(cl,o,r,p,t) হয় ডুকচেভ প্রদত্ত মৃত্তিকা সৃষ্টির উপাদানের সমীকরণ।
27. মৃত্তিকা সৃষ্টির সক্রিয় উপাদান গুলি কি কি?
উত্তর: মৃত্তিকা সৃষ্টির সক্রিয় উপাদান হয় জলবায়ু(cl) ও জীবজগৎ(o)।
28. মৃত্তিকা সৃষ্টির নিষ্ক্রিয় উপাদান গুলি কি কি?
উত্তর: মৃত্তিকা সৃষ্টির নিষ্ক্রিয় উপাদান গুলি হয় জনক শিলা (p), ভূপ্রকৃতি (r) ও সময় (t)।
29. এন্ডোডায়নামোমরফিক মৃত্তিকা কি?
উত্তর: মৃত্তিকা গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে মূল উপকরণের ভিত্তিতে যে মাটি গঠিত হয়, তাকে এন্ডোডায়নামোমরফিক মৃত্তিকা বলে। যেমন- লিথোসল।
30. এক্টোডায়নামোমরফিক মৃত্তিকা কি?
উত্তর: মাটি গঠনের পরবর্তী পর্যায়ে জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের ভিত্তিতে যে মাটি গঠিত হয়, তাকে এক্টোডায়নামোমরফিক মৃত্তিকা বলে। যেমন - চারনোজেম, ল্যাটেরাইট।
31. মৃত্তিকা ক্যাটেনা কাকে বলে?
উত্তর: একই ধরনের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু অঞ্চলে ভূমির ঢাল বরাবর যখন মৃত্তিকা স্তরগুলি নিজেদের মধ্যে এবং ভুপ্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত হয়, তখন তাকে মৃত্তিকা ক্যাটেনা বলে।
32. মৃত্তিকা ক্যাটেনার ধারণাটি কোন বিজ্ঞানী দিয়েছেন?
উত্তর: বিজ্ঞানী মিলনে মৃত্তিকা ক্যাটেনার ধারণাটি দিয়েছেন।
33. কঙ্কালসার মাটি কাকে বলে?
উত্তর: খাড়া পার্বত্য ঢালের নবীন ও অপরিণত মাটির সঙ্গে শিলাখণ্ড, বোল্ডার, নুড়ি ও কাকর মিশে যে মাটি সৃষ্টি হয় তাকে কঙ্কালসার মাটি বলে।
34. মৃত্তিকা পরিলেখ কাকে বলে?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠ থেকে নিচের দিকে আদি শিলা পর্যন্ত পরপর সুবিন্যাস্ত স্তরসমূহের উলম্ব প্রস্থচ্ছেদকে মৃত্তিকা পরিলেখ বলে।
35. মৃত্তিকা স্তর বা হোরাইজন কি?
উত্তর: মাটি গঠনকারী নিয়ন্ত্রক ও প্রক্রিয়া সমূহের প্রভাবে সৃষ্ট এবং ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে অনুভূমিকভাবে বিস্তৃত ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যযুক্ত এক একটি পাতলা অথচ সুস্পষ্ট অঞ্চলকে মৃত্তিকা স্তর বা হোরাইজন বলে।
36. আদর্শ মৃত্তিকা পরিলেখ কাকে বলে?
উত্তর: মাটির যে পরিলেখে সমস্ত স্তর ও উপস্তর সুস্পষ্ট ও সম্পূর্ণ ভাবে থাকে, তাকে আদর্শ মৃত্তিকা পরিলেখ বলে।
37. কর্তিত পরিলেখ কি?
উত্তর: বিভিন্ন কারণে মৃত্তিকা পরিলেখের উপরিস্তর দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে তার নিচের স্তর উন্মুক্ত হলে যে পরিলেখ গঠিত হয় তাকে কর্তিত পরিলেখ বলে।
38. মৃত্তিকা খনিজ স্তর কাকে বলে?
উত্তর: মৃত্তিকা পরিলেখ এর A, B, C তিনটি স্তর অজৈব বিভিন্ন খনিজ পদার্থ পূর্ণ থাকায় এই তিনটি স্তরকে একত্রে খনিজ স্তর বলে।
39. মৃত্তিকা জৈব স্তর কাকে বলে?
উত্তর: A স্তরের উপরে জৈব পদার্থে সৃষ্ট O স্তরকে মৃত্তিকা জৈব স্তর বলা হয়।
40. সোলাম কাকে বলে?
উত্তর: মৃত্তিকা পরিলেখে পরিণত মাটির নরম, শিথিল ও হিউমাস সমৃদ্ধ A এবং B স্তরকে একত্রে সোলাম বলে বলা হয়।
41. মৃত্তিকা পরিলেখের কোন স্তরকে পুষ্টি ভান্ডার বলা হয়?
উত্তর: বিভিন্ন খনিজ সমৃদ্ধ B স্তরকে মৃত্তিকা পরিলেখের পুষ্টি ভান্ডার বলা হয়।
42. পরিণত মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: অনুকূল পরিবেশে মাটি গঠনকারী প্রক্রিয়া গুলির দীর্ঘসময়ের কাজে আদি শিলার চিহ্নহীন, সঙ্ঘবদ্ধ ও সুস্পষ্ট স্তরবিশিষ্ট যে মাটির গঠন হয়, তাকে পরিণত মৃত্তিকা বলে।
43. অপরিণত মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: প্রতিকূল পরিবেশে মাটি গঠনকারী প্রক্রিয়া গুলির অসম্পূর্ণ কাজে আদি শিলার ছাপ যুক্ত, স্তর হীন, আলগা ও ভঙ্গুর মাটিকে অপরিণত মৃত্তিকা বলে।
44. আঞ্চলিক মাটি কাকে বলে?
উত্তর: নির্দিষ্ট অক্ষরেখা বরাবর কেবলমাত্র জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের প্রভাবে সুস্পষ্ট স্তর যুক্ত সুগভীর পরিণত মাটিকে আঞ্চলিক মৃত্তিকা বলে।
45. আন্ত:আঞ্চলিক মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: প্রতিটি আঞ্চলিক মৃত্তিকা বলয়ের স্থানীয়ভাবে ভূপ্রকৃতি, আদি শিলা ও অনু-জলবায়ুর তারতম্যে নতুন ধরনের মাটি সৃষ্টি হয় তাকে আন্ত:আঞ্চলিক মাটি বলে।
46. অ-আঞ্চলিক মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: নদী, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ ও সমুদ্র তরঙ্গ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা বাহিত রেগোলিথ অন্যত্র সঞ্চিত হয়ে স্তরহীন, অপরিণত, অগভীর যে মৃত্তিকা সৃষ্টি হয় তাকে অ-আঞ্চলিক মৃত্তিকা বলে।
47. ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: উষ্ণ ও আর্দ্র ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে ল্যাটেরাইজেশন প্রক্রিয়া ইটের মতো শক্ত লাল রঙের অম্লধর্মী স্বল্প জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মৌচাকের মতো গঠন যুক্ত অনুর্বর মৃত্তিকাকে ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা বলে।
48. পডজল মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: শীতল ও আর্দ্র নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর অন্তর্গত সরলবর্গীয় বনভূমি অঞ্চলে আম্লিক গ্রানাইট, বেলেপাথর থেকে সৃষ্ট ছাই রঙের অম্লধর্মী জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ অনুর্বর মৃত্তিকাকে পডজল মৃত্তিকা বলে।
49. চারনোজেম মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে ক্যালসিফিকেশন প্রক্রিয়া সৃষ্ট ক্ষারধর্মী পেডোক্যাল শ্রেণীর কাল রঙের হিউমাস সমৃদ্ধ উর্বর মৃত্তিকাকে চারনোজেম মৃত্তিকা বলে।
50. পলি মাটি কাকে বলে?
উত্তর: নদী অববাহিকায় দীর্ঘকাল ধরে পলি সঞ্চিত হয়ে স্তরহীন উর্বর মৃত্তিকা সৃষ্টি হয় তাকে পলি মৃত্তিকা বলে।
51. লোয়েস মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: মরু অঞ্চল থেকে বায়ু বাহিত বালুকা রাশি অন্যত্র সঞ্চিত হয়ে এক ধরনের বালুকাময় মৃত্তিকা গড়ে তোলে একে লোয়েস মৃত্তিকা বলে।
52. মাটির ভৌত ধর্ম বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মাটির যেসব বৈশিষ্ট্যকে চোখে দেখা যায় বা অনুভব করা যায়, তাদের মাটির ভৌত ধর্ম বলে। যেমন গ্রথন, গঠন।
53. মাটির গ্রথন বা বুনন কাকে বলে?
উত্তর: মৃত্তিকায় উপস্থিত পলি, কাদা ও বালির আপেক্ষিক আনুপাতিক পরিমাণকে মাটির গ্রথন বা বুনন বলা হয়।
54. মাটির গঠন কাকে বলে?
উত্তর: মৃত্তিকা গঠনকারী কণাগুলি পরস্পর সংযুক্ত হয়ে যে সুস্পষ্ট জ্যামিতিক আকারে বিন্যাস সৃষ্টি করে তাকে মৃত্তিকার গঠন বলে।
55. বাতান্বয়ন কি?
উত্তর: বায়ুমণ্ডল ও মাটির মধ্যে জলীয় বাষ্প ও বায়ুর চক্রাকারে আবর্তনকে বাতান্বয়ন বলে।
56. পেড কাকে বলে?
উত্তর: মাটির প্রাথমিক কনাগুলি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় একত্রিত হয়ে যে গুটি তৈরি হয়, তাকে পেড বলে।
57. পেডন কাকে বলে?
উত্তর: প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পৃথক সত্তা বিশিষ্ট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা যুক্ত ত্রিমাত্রিক মাটি গঠনের একককে পেডন বলা হয়।
58. পলিপেডন কাকে বলে?
উত্তর: একই বৈশিষ্ট্যযুক্ত অনেকগুলি পেডন একত্রে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করলে, তাকে পলিপেডন বলা হয়।
59. এপিপেডন কাকে বলে?
উত্তর: পেডনের ভূপৃষ্ঠস্থ মাটির স্তর বা পরিলেখের প্রথম স্তরটির ত্রিমাত্রিক রূপকে এপিপেডন বলা হয়।
60. মৃত্তিকার রন্ধ্র পরিসর বা অনুছিদ্র কি?
উত্তর: মৃত্তিকা কণাগুলির মধ্যে যে ফাঁকা স্থান থাকে তাকে মৃত্তিকার রন্ধ্র বলা হয়।
61. মৃত্তিকা সচ্ছিদ্রতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মৃত্তিকা কণাগুলির মধ্যে যে ফাঁকা স্থান থাকে তার আয়তন ও মৃত্তিকার মোট আয়তনের শতকরা পরিমাণকে মৃত্তিকা সচ্ছিদ্রতা বলা হয়।
62. মাটির প্রবেশ্যতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মৃত্তিকা স্তরে রন্ধ্রের মাধ্যমে জল প্রবেশ করার ক্ষমতা কে মৃত্তিকার প্রবেশ্যতা বলা হয়।
63. মাটির জল ধারণ ক্ষমতা বলতে কি বোঝায়?
উত্তর: নির্দিষ্ট আয়তনের মাটি ছিদ্রের মধ্যে যে পরিমাণ জল ধরে রাখতে পারে, সেই পরিমাণকে মাটির জল ধারণ ক্ষমতা বলে।
64. মাটির আর্দ্রতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মৃত্তিকা রন্ধের মধ্যে জলের উপস্থিতি অর্থাৎ জলসিক্ত অবস্থাকে মাটির আর্দ্রতা বলে।
65. ভৌত শুষ্ক মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: বালি প্রধান মাটিতে সব জল নিচে নেমে যাওয়ায় আর্দ্রতা কম হয়, একে ভৌত শুষ্ক মাটি বলা হয়।
66. শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: আর্দ্র মাটির জলে লবন এর মাত্রা বেশি হলে উদ্ভিতা গ্রহণ করতে পারে না, একে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা বলা হয়।
67. মুহূরষূবিন্দু (wilting point) কি?
উত্তর: মাটির আর্দ্রতার যে অবস্থায় উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য জল সরবরাহ প্রয়োজন হয় তাকে মুহূরষূবিন্দু বলা হয়।
68. মাটির সংশক্তি (Cohesion) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মাটির কাদা কণাগুলির পারস্পরিক আকর্ষণ করে ধরে রাখার ক্ষমতা বা প্রবণতাকে মাটির সংশক্তি বলা হয়।
69. মাটির আসঞ্জন (Adhesion) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মাটির পৃষ্ঠদেশে জল লেগে থাকার প্রবণতা বা ক্ষমতাকে মাটির আসঞ্জন বলা হয়।
70. গিলগাই কাকে বলে?
উত্তর: কৃষ্ণ মৃত্তিকায় কাদা কণা আর্দ্রতা ও শুষ্কতার জন্য অত্যাধিক স্ফীত ও সংকুচিত হয়ে ফাটল সৃষ্টি হয়ে মাটির পৃষ্ঠস্তরে বন্ধুর ভূভাগ সৃষ্টি হয়, একে গিলগাই বলা হয়।
71. মৃত্তিকা Ph বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: 1 লিটার বিশুদ্ধ জলে সক্রিয় বা মুক্ত হাইড্রোজেন আয়নের পরিমাণকে মাটির Ph বলা হয়। ph এর মান
0-14 মধ্যে হয়।
72. ক্ষারকীয় বা পেডোক্যাল মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: মাটিতে মুক্ত বা সক্রিয় হাইড্রোজেনের তুলনায় সক্রিয় হাইড্রোক্সিল আয়নের মাত্রা বেশি (Ph -7 এর বেশি) হলে তাকে ক্ষারকীয় বা পেডোক্যাল মৃত্তিকা বলা হয়।
73. আম্লিক বা পেডালফার মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর: মাটিতে মুক্ত বা সক্রিয় হাইড্রোজেনের তুলনায় সক্রিয় হাইড্রোক্সিল আয়নের মাত্রা কম (Ph -7 এর কম) হলে তাকে আম্লিক বা পেডালফার মৃত্তিকা বলা হয়।
74. প্রশমিত বা নিরপেক্ষ মাটি কাকে বলে?
উত্তর: মাটিতে মুক্ত বা সক্রিয় হাইড্রোজেন ও সক্রিয় হাইড্রোক্সিল আয়নের মাত্রা সমান (Ph - এর মান 7) হলে, তাকে প্রশমিত বা নিরপেক্ষ মাটি বলা হয়।
75. কলয়েড কাকে বলে?
উত্তর: মাটি গঠনকারী অতি সূক্ষ্ম (0.002 মিমির কম) খনিজ ও জৈবকণাকে কলয়েড বলা হয়।
76. মিশেল কি?
উত্তর: ঋণাত্মক তড়িৎগ্রস্ত জৈব ও অজৈব কলয়েড গুলি মিশেল নামে পরিচিত।
77. মৃত্তিকার উর্বরতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: মৃত্তিকার বিভিন্ন প্রকার পুষ্টিকর উপাদানের সঠিক পরিমাণে যোগানের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা হল মৃত্তিকার উর্বরতা।
78. মৃত্তিকার উৎপাদনশীলতা বলতে কি বোঝায়?
উত্তর: উপযুক্ত পরিচর্যা অর্থাৎ কর্ষণ, জলসেচ, সার প্রয়োগ প্রভৃতির মাধ্যমে মৃত্তিকার এক বা একাধিক ফসল উৎপাদনের ক্ষমতাকে মৃত্তিকার উৎপাদনশীলতা বলা হয়।
79. উদ্ভিদের পুষ্টিমৌল বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: উদ্ভিদ তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, বিকাশ ও পুষ্টির জন্য মাটি, জল ও বায়ু থেকে যেসব মৌলিক খাদ্য উপাদান গ্রহণ করে, তাদের উদ্ভিদের পুষ্টিমৌল বলে।
80. মুখ্য পুষ্টিমৌল কাকে বলে?
উত্তর: যেসব উপাদান উদ্ভিদ বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য বেশি পরিমাণে গ্রহণ করে, তাদের মুখ্য পুষ্টিমৌল বলা হয়(NPK)।
81. গৌণ পুষ্টিমৌল কি?
উত্তর: যেসব উপাদান উদ্ভিদ বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য কম পরিমাণে গ্রহণ করে কিন্তু অপরিহার্য, তাদের গৌণ পুষ্টিমৌল বলা হয়।
82. মৃত্তিকার অবক্ষয় বা অবনমন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও মানবীয় কার্যাবলীর জন্য মাটির ভৌত রাসায়নিক ধর্ম পরিবর্তন ঘটে ও উর্বরতা হ্রাস পায় এবং মাটি অপসারিত হয় তাকে মৃত্তিকার অবক্ষয় বা অবনমন বলা হয়।
83. মৃত্তিকা ক্ষয় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও মানবীয় কার্যাবলীর জন্য মাটির উপরের স্তরের হালকা ও আলগা মাটি কণা বাহিত ও অপসারিত হয়, তাকে মৃত্তিকার ক্ষয় বলা হয়।
84. নালি ক্ষয় কাকে বলে?
উত্তর: ঢালু জমি বা শুষ্ক অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের তীব্র জলস্রোত নালি সৃষ্টি করে যে ক্ষয় করে, তাকে নালি ক্ষয় হয় বলে।
85. খাত ক্ষয় কাকে বলে?
উত্তর: নালি ক্রমশ প্রশস্ত ও গভীর হয়ে খাতে পরিণত হয়ে যে প্রবল ক্ষয় হয় তাকে খাত ক্ষয় বলা হয়।
86. র্যাভাইন কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদহীন অতি ঢালু ভূভাগে গালি ক্রমশ গভীর হলে খাড়া পাড় যুক্ত র্যাভাইনে পরিণত হয়ে যে ভয়াবহ ক্ষয় হয়, তাকে র্যাভাইন বলা হয় ।
87. বদভূমি কাকে বলে?
উত্তর: বৃক্ষহীন শুষ্ক ও বিস্তৃত অঞ্চলে নালি, খাত ও র্যাভাইন ক্ষয়ের মাধ্যমে অত্যাধিক মাটি ক্ষয়ের ফলে যে উঁচু-নিচু, অনুর্বর ও ক্ষয়প্রাপ্ত ভূভাগ সৃষ্টি হয়, তাকে বদভূমি বলে।
88. USDA প্রবর্তিত মৃত্তিকা ক্ষয়ের নিয়ন্ত্রকের সমীকরণটি কি?
উত্তর: USDA প্রবর্তিত মৃত্তিকা ক্ষয়ের নিয়ন্ত্রকের সমীকরণটি হয় E = f (R,K,L,S,C,P)
উত্তর: মৃত্তিকা বিজ্ঞানের যে অংশে মৃত্তিকার উৎপত্তি, উপাদান, স্তরায়ন, ধর্ম ও শ্রেণীবিভাগ প্রকৃতির আলোচনা করা হয় তাকে পেডোলজি বলে।
উত্তর: মৃত্তিকা বিজ্ঞানের যে অংশে মৃত্তিকাকে উদ্ভিদের জন্ম, বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয় তাকে ইডাফোলজি বলে।
উত্তর: আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট শিলাচূর্ণ বিরাজিত শিলার একটি শিথিল স্তরকে রেগোলিথ বলা হয়।
উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ ও বর্জ্য পদার্থের বিশ্লিষ্ট কঠিন ও জটিল পদার্থকে মাটির জৈব পদার্থ বলা হয়, যার পরিমাণ হল 5 শতাংশ।
উত্তর: সূক্ষ্ম জীবাণু দ্বারা উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহ ও বর্জ্য পদার্থের বিশ্লিষ্ট কালো বা বাদামী রঙের চটচটে পদার্থকে , তাকে হিউমাস বলে।
উত্তর: পৃথিবীর যে-কোনো স্থানে যে-কোনো পরিবেশে মৃত্তিকা সৃষ্টির যে প্রক্রিয়ায় গুলি সক্রিয় থাকে, তাদের মৌলিক প্রক্রিয়া বলে।
উত্তর: সূক্ষ্ম জীবাণুরা উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ, ঝরাপাতা ও অন্যান্য জৈব বর্জ্য পদার্থকে বিয়োজিত ও সংশ্লেষিত করে হিউমাসে পরিণত করে, হিউমাস গঠনের এই প্রক্রিয়াকে হিউমিফিকেশন বলে।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হয়ে বা জলে ভাসমান অবস্থায় মাটির নিচের স্তরে স্থানান্তরিত হয় তাকে এলুভিয়েশন বলে।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হয়ে মাটির নিচের স্তরে স্থানান্তরিত হয় তাকে ধৌত প্রক্রিয়া বা লিচিং বলে।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে ভাসমান অবস্থায় যান্ত্রিক উপায় মাটির নিচের স্তরে স্থানান্তরিত হয় তাকে লেসিভেজ বলে।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির নিম্নস্তরের জল ও দ্রবণীয় পদার্থ গুলি মাটির ছিদ্রের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে উপরে উঠে আসে, তাকে কৌশিক প্রক্রিয়া বলে।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় মাটির উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থ বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হয়ে বা জলে ভাসমান অবস্থায় মাটির নিচের স্তরে সঞ্চিত হয়, তাকে ইলুভিয়েশন বলে।
উত্তর: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি নির্দিষ্ট মৃত্তিকা সৃষ্টির যে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকে, তাকে মাটি সৃষ্টির বিশেষ প্রক্রিয়া বলে।
উত্তর: শীতল ও আর্দ্র নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে আম্লিক গ্রানাইট, বেলেপাথর থেকে ছাই রঙের অম্লধর্মী পডজল মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে পডজোলাইজেশন বলে।
উত্তর: সরলবর্গীয় অঞ্চলে সূক্ষ্ম শিকড় দ্বারা গঠিত জৈব স্তর বা 'O' স্তরকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ভাষায় ডাফ বলে।
উত্তর: পর্ণমোচী অরণ্যে শিথিল ও মুচমুচে ধরনের জৈব স্তর বা 'O' স্তরকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ভাষায় মাল বলে।
উত্তর: লোহা ও অ্যালুমিনিয়ামের জারিত কণাগুলোকে সেসক্যুঅক্সাইড বলা হয়।
উত্তর: পডজল মৃত্তিকায় এলুভিয়েশন প্রক্রিয়া A স্তর থেকে ধাতব ক্যাটায়ন, সেসক্যুঅক্সাইড ও কিছু সূক্ষ্ম পলি B স্তরে চলে আসে। ফলে B স্তরে অপেক্ষাকৃত অপ্রবেশ ও শক্ত হয়ে যায়, একে হার্ডপ্যান বলে।
উত্তর: উষ্ণ ও আর্দ্র ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটির উপরিভাগে লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড সঞ্চিত হয় যে সিমেন্ট জাতীয় কঠিন লাল স্তর সৃষ্টি হয়, তাকে ডিউরিক্রাস্ট বলে।
উত্তর: শুষ্ক ও উষ্ণ মরু বা মরুপ্রায় অঞ্চলে সালফেট বা ক্লোরাইড সমৃদ্ধ লবণাক্ত সোলোনচাক মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে স্যালিনাইজেশন বলে।
উত্তর: নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি ও মরু অঞ্চলে ক্ষারধর্মী পেডোক্যাল শ্রেণীর চারনোজেম ও চেস্টনাট মাটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে ক্যালসিফিকেশন বলে।
উত্তর: মরু জলবায়ু অঞ্চলে সোডিয়াম আয়ন সঞ্চয়ের ফলে তীব্র ক্ষারধর্মী পেডোক্যাল জাতীয় সোলোনেজ মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে অ্যালকালাইজেশন বলে।
উত্তর: জলমগ্ন নিম্নভূমিতে অক্সিজেনের অভাবে বিজারণ প্রক্রিয়া ধূসর রঙের গ্লেই মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে গ্লেইজেশন বলে।
উত্তর: S = f(cl,o,p,t) হয় ডুকচেভ প্রদত্ত মৃত্তিকা সৃষ্টির উপাদানের সমীকরণ।
উত্তর: S = f(cl,o,r,p,t) হয় ডুকচেভ প্রদত্ত মৃত্তিকা সৃষ্টির উপাদানের সমীকরণ।
উত্তর: মৃত্তিকা সৃষ্টির সক্রিয় উপাদান হয় জলবায়ু(cl) ও জীবজগৎ(o)।
উত্তর: মৃত্তিকা সৃষ্টির নিষ্ক্রিয় উপাদান গুলি হয় জনক শিলা (p), ভূপ্রকৃতি (r) ও সময় (t)।
উত্তর: মৃত্তিকা গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে মূল উপকরণের ভিত্তিতে যে মাটি গঠিত হয়, তাকে এন্ডোডায়নামোমরফিক মৃত্তিকা বলে। যেমন- লিথোসল।
উত্তর: মাটি গঠনের পরবর্তী পর্যায়ে জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের ভিত্তিতে যে মাটি গঠিত হয়, তাকে এক্টোডায়নামোমরফিক মৃত্তিকা বলে। যেমন - চারনোজেম, ল্যাটেরাইট।
উত্তর: একই ধরনের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু অঞ্চলে ভূমির ঢাল বরাবর যখন মৃত্তিকা স্তরগুলি নিজেদের মধ্যে এবং ভুপ্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত হয়, তখন তাকে মৃত্তিকা ক্যাটেনা বলে।
উত্তর: বিজ্ঞানী মিলনে মৃত্তিকা ক্যাটেনার ধারণাটি দিয়েছেন।
উত্তর: খাড়া পার্বত্য ঢালের নবীন ও অপরিণত মাটির সঙ্গে শিলাখণ্ড, বোল্ডার, নুড়ি ও কাকর মিশে যে মাটি সৃষ্টি হয় তাকে কঙ্কালসার মাটি বলে।
উত্তর: ভূপৃষ্ঠ থেকে নিচের দিকে আদি শিলা পর্যন্ত পরপর সুবিন্যাস্ত স্তরসমূহের উলম্ব প্রস্থচ্ছেদকে মৃত্তিকা পরিলেখ বলে।
উত্তর: মাটি গঠনকারী নিয়ন্ত্রক ও প্রক্রিয়া সমূহের প্রভাবে সৃষ্ট এবং ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে অনুভূমিকভাবে বিস্তৃত ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যযুক্ত এক একটি পাতলা অথচ সুস্পষ্ট অঞ্চলকে মৃত্তিকা স্তর বা হোরাইজন বলে।
উত্তর: মাটির যে পরিলেখে সমস্ত স্তর ও উপস্তর সুস্পষ্ট ও সম্পূর্ণ ভাবে থাকে, তাকে আদর্শ মৃত্তিকা পরিলেখ বলে।
উত্তর: বিভিন্ন কারণে মৃত্তিকা পরিলেখের উপরিস্তর দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে তার নিচের স্তর উন্মুক্ত হলে যে পরিলেখ গঠিত হয় তাকে কর্তিত পরিলেখ বলে।
উত্তর: মৃত্তিকা পরিলেখ এর A, B, C তিনটি স্তর অজৈব বিভিন্ন খনিজ পদার্থ পূর্ণ থাকায় এই তিনটি স্তরকে একত্রে খনিজ স্তর বলে।
উত্তর: A স্তরের উপরে জৈব পদার্থে সৃষ্ট O স্তরকে মৃত্তিকা জৈব স্তর বলা হয়।
উত্তর: মৃত্তিকা পরিলেখে পরিণত মাটির নরম, শিথিল ও হিউমাস সমৃদ্ধ A এবং B স্তরকে একত্রে সোলাম বলে বলা হয়।
উত্তর: বিভিন্ন খনিজ সমৃদ্ধ B স্তরকে মৃত্তিকা পরিলেখের পুষ্টি ভান্ডার বলা হয়।
উত্তর: অনুকূল পরিবেশে মাটি গঠনকারী প্রক্রিয়া গুলির দীর্ঘসময়ের কাজে আদি শিলার চিহ্নহীন, সঙ্ঘবদ্ধ ও সুস্পষ্ট স্তরবিশিষ্ট যে মাটির গঠন হয়, তাকে পরিণত মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: প্রতিকূল পরিবেশে মাটি গঠনকারী প্রক্রিয়া গুলির অসম্পূর্ণ কাজে আদি শিলার ছাপ যুক্ত, স্তর হীন, আলগা ও ভঙ্গুর মাটিকে অপরিণত মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: নির্দিষ্ট অক্ষরেখা বরাবর কেবলমাত্র জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের প্রভাবে সুস্পষ্ট স্তর যুক্ত সুগভীর পরিণত মাটিকে আঞ্চলিক মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: প্রতিটি আঞ্চলিক মৃত্তিকা বলয়ের স্থানীয়ভাবে ভূপ্রকৃতি, আদি শিলা ও অনু-জলবায়ুর তারতম্যে নতুন ধরনের মাটি সৃষ্টি হয় তাকে আন্ত:আঞ্চলিক মাটি বলে।
উত্তর: নদী, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ ও সমুদ্র তরঙ্গ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা বাহিত রেগোলিথ অন্যত্র সঞ্চিত হয়ে স্তরহীন, অপরিণত, অগভীর যে মৃত্তিকা সৃষ্টি হয় তাকে অ-আঞ্চলিক মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: উষ্ণ ও আর্দ্র ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে ল্যাটেরাইজেশন প্রক্রিয়া ইটের মতো শক্ত লাল রঙের অম্লধর্মী স্বল্প জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মৌচাকের মতো গঠন যুক্ত অনুর্বর মৃত্তিকাকে ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: শীতল ও আর্দ্র নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর অন্তর্গত সরলবর্গীয় বনভূমি অঞ্চলে আম্লিক গ্রানাইট, বেলেপাথর থেকে সৃষ্ট ছাই রঙের অম্লধর্মী জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ অনুর্বর মৃত্তিকাকে পডজল মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে ক্যালসিফিকেশন প্রক্রিয়া সৃষ্ট ক্ষারধর্মী পেডোক্যাল শ্রেণীর কাল রঙের হিউমাস সমৃদ্ধ উর্বর মৃত্তিকাকে চারনোজেম মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: নদী অববাহিকায় দীর্ঘকাল ধরে পলি সঞ্চিত হয়ে স্তরহীন উর্বর মৃত্তিকা সৃষ্টি হয় তাকে পলি মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: মরু অঞ্চল থেকে বায়ু বাহিত বালুকা রাশি অন্যত্র সঞ্চিত হয়ে এক ধরনের বালুকাময় মৃত্তিকা গড়ে তোলে একে লোয়েস মৃত্তিকা বলে।
উত্তর: মাটির যেসব বৈশিষ্ট্যকে চোখে দেখা যায় বা অনুভব করা যায়, তাদের মাটির ভৌত ধর্ম বলে। যেমন গ্রথন, গঠন।
উত্তর: মৃত্তিকায় উপস্থিত পলি, কাদা ও বালির আপেক্ষিক আনুপাতিক পরিমাণকে মাটির গ্রথন বা বুনন বলা হয়।
উত্তর: মৃত্তিকা গঠনকারী কণাগুলি পরস্পর সংযুক্ত হয়ে যে সুস্পষ্ট জ্যামিতিক আকারে বিন্যাস সৃষ্টি করে তাকে মৃত্তিকার গঠন বলে।
উত্তর: বায়ুমণ্ডল ও মাটির মধ্যে জলীয় বাষ্প ও বায়ুর চক্রাকারে আবর্তনকে বাতান্বয়ন বলে।
উত্তর: মাটির প্রাথমিক কনাগুলি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় একত্রিত হয়ে যে গুটি তৈরি হয়, তাকে পেড বলে।
উত্তর: প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পৃথক সত্তা বিশিষ্ট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা যুক্ত ত্রিমাত্রিক মাটি গঠনের একককে পেডন বলা হয়।
উত্তর: একই বৈশিষ্ট্যযুক্ত অনেকগুলি পেডন একত্রে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করলে, তাকে পলিপেডন বলা হয়।
উত্তর: পেডনের ভূপৃষ্ঠস্থ মাটির স্তর বা পরিলেখের প্রথম স্তরটির ত্রিমাত্রিক রূপকে এপিপেডন বলা হয়।
উত্তর: মৃত্তিকা কণাগুলির মধ্যে যে ফাঁকা স্থান থাকে তাকে মৃত্তিকার রন্ধ্র বলা হয়।
উত্তর: মৃত্তিকা কণাগুলির মধ্যে যে ফাঁকা স্থান থাকে তার আয়তন ও মৃত্তিকার মোট আয়তনের শতকরা পরিমাণকে মৃত্তিকা সচ্ছিদ্রতা বলা হয়।
উত্তর: মৃত্তিকা স্তরে রন্ধ্রের মাধ্যমে জল প্রবেশ করার ক্ষমতা কে মৃত্তিকার প্রবেশ্যতা বলা হয়।
উত্তর: নির্দিষ্ট আয়তনের মাটি ছিদ্রের মধ্যে যে পরিমাণ জল ধরে রাখতে পারে, সেই পরিমাণকে মাটির জল ধারণ ক্ষমতা বলে।
উত্তর: মৃত্তিকা রন্ধের মধ্যে জলের উপস্থিতি অর্থাৎ জলসিক্ত অবস্থাকে মাটির আর্দ্রতা বলে।
উত্তর: বালি প্রধান মাটিতে সব জল নিচে নেমে যাওয়ায় আর্দ্রতা কম হয়, একে ভৌত শুষ্ক মাটি বলা হয়।
উত্তর: আর্দ্র মাটির জলে লবন এর মাত্রা বেশি হলে উদ্ভিতা গ্রহণ করতে পারে না, একে শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা বলা হয়।
উত্তর: মাটির আর্দ্রতার যে অবস্থায় উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য জল সরবরাহ প্রয়োজন হয় তাকে মুহূরষূবিন্দু বলা হয়।
উত্তর: মাটির কাদা কণাগুলির পারস্পরিক আকর্ষণ করে ধরে রাখার ক্ষমতা বা প্রবণতাকে মাটির সংশক্তি বলা হয়।
উত্তর: মাটির পৃষ্ঠদেশে জল লেগে থাকার প্রবণতা বা ক্ষমতাকে মাটির আসঞ্জন বলা হয়।
উত্তর: কৃষ্ণ মৃত্তিকায় কাদা কণা আর্দ্রতা ও শুষ্কতার জন্য অত্যাধিক স্ফীত ও সংকুচিত হয়ে ফাটল সৃষ্টি হয়ে মাটির পৃষ্ঠস্তরে বন্ধুর ভূভাগ সৃষ্টি হয়, একে গিলগাই বলা হয়।
উত্তর: 1 লিটার বিশুদ্ধ জলে সক্রিয় বা মুক্ত হাইড্রোজেন আয়নের পরিমাণকে মাটির Ph বলা হয়। ph এর মান
0-14 মধ্যে হয়।
উত্তর: মাটিতে মুক্ত বা সক্রিয় হাইড্রোজেনের তুলনায় সক্রিয় হাইড্রোক্সিল আয়নের মাত্রা বেশি (Ph -7 এর বেশি) হলে তাকে ক্ষারকীয় বা পেডোক্যাল মৃত্তিকা বলা হয়।
উত্তর: মাটিতে মুক্ত বা সক্রিয় হাইড্রোজেনের তুলনায় সক্রিয় হাইড্রোক্সিল আয়নের মাত্রা কম (Ph -7 এর কম) হলে তাকে আম্লিক বা পেডালফার মৃত্তিকা বলা হয়।
উত্তর: মাটিতে মুক্ত বা সক্রিয় হাইড্রোজেন ও সক্রিয় হাইড্রোক্সিল আয়নের মাত্রা সমান (Ph - এর মান 7) হলে, তাকে প্রশমিত বা নিরপেক্ষ মাটি বলা হয়।
উত্তর: মাটি গঠনকারী অতি সূক্ষ্ম (0.002 মিমির কম) খনিজ ও জৈবকণাকে কলয়েড বলা হয়।
উত্তর: ঋণাত্মক তড়িৎগ্রস্ত জৈব ও অজৈব কলয়েড গুলি মিশেল নামে পরিচিত।
উত্তর: মৃত্তিকার বিভিন্ন প্রকার পুষ্টিকর উপাদানের সঠিক পরিমাণে যোগানের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা হল মৃত্তিকার উর্বরতা।
উত্তর: উপযুক্ত পরিচর্যা অর্থাৎ কর্ষণ, জলসেচ, সার প্রয়োগ প্রভৃতির মাধ্যমে মৃত্তিকার এক বা একাধিক ফসল উৎপাদনের ক্ষমতাকে মৃত্তিকার উৎপাদনশীলতা বলা হয়।
উত্তর: উদ্ভিদ তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, বিকাশ ও পুষ্টির জন্য মাটি, জল ও বায়ু থেকে যেসব মৌলিক খাদ্য উপাদান গ্রহণ করে, তাদের উদ্ভিদের পুষ্টিমৌল বলে।
উত্তর: যেসব উপাদান উদ্ভিদ বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য বেশি পরিমাণে গ্রহণ করে, তাদের মুখ্য পুষ্টিমৌল বলা হয়(NPK)।
উত্তর: যেসব উপাদান উদ্ভিদ বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য কম পরিমাণে গ্রহণ করে কিন্তু অপরিহার্য, তাদের গৌণ পুষ্টিমৌল বলা হয়।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও মানবীয় কার্যাবলীর জন্য মাটির ভৌত রাসায়নিক ধর্ম পরিবর্তন ঘটে ও উর্বরতা হ্রাস পায় এবং মাটি অপসারিত হয় তাকে মৃত্তিকার অবক্ষয় বা অবনমন বলা হয়।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি ও মানবীয় কার্যাবলীর জন্য মাটির উপরের স্তরের হালকা ও আলগা মাটি কণা বাহিত ও অপসারিত হয়, তাকে মৃত্তিকার ক্ষয় বলা হয়।
উত্তর: ঢালু জমি বা শুষ্ক অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের তীব্র জলস্রোত নালি সৃষ্টি করে যে ক্ষয় করে, তাকে নালি ক্ষয় হয় বলে।
উত্তর: নালি ক্রমশ প্রশস্ত ও গভীর হয়ে খাতে পরিণত হয়ে যে প্রবল ক্ষয় হয় তাকে খাত ক্ষয় বলা হয়।
উত্তর: উদ্ভিদহীন অতি ঢালু ভূভাগে গালি ক্রমশ গভীর হলে খাড়া পাড় যুক্ত র্যাভাইনে পরিণত হয়ে যে ভয়াবহ ক্ষয় হয়, তাকে র্যাভাইন বলা হয় ।
উত্তর: বৃক্ষহীন শুষ্ক ও বিস্তৃত অঞ্চলে নালি, খাত ও র্যাভাইন ক্ষয়ের মাধ্যমে অত্যাধিক মাটি ক্ষয়ের ফলে যে উঁচু-নিচু, অনুর্বর ও ক্ষয়প্রাপ্ত ভূভাগ সৃষ্টি হয়, তাকে বদভূমি বলে।
উত্তর: USDA প্রবর্তিত মৃত্তিকা ক্ষয়ের নিয়ন্ত্রকের সমীকরণটি হয় E = f (R,K,L,S,C,P)