দূর্গাপুরকে ভারতের রূঢ় বলা হয় কেন

দুর্গাপুর ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লৌহ ইস্পাত শিল্পকেন্দ্র। জার্মানির রূঢ় শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ের সাদৃশ্য তুলনা করে দূর্গাপুরকে ভারতের রূঢ় বলা হয়। দুর্গাপুর জার্মানির রূঢ় শিল্পাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য গুলি হল
 
1. অবস্থান:
জার্মানির রূঢ়: ইউরোপের জার্মানির পশ্চিম প্রান্তে রাইন নদী তার দুই উপনদী রূঢ় লিপের সংযোগস্থলে রূঢ় শিল্পাঞ্চল অবস্থিত।
 
দুর্গাপুর: ভারতের পূর্বাংশে দামোদর  নদের তীরে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল অবস্থিত।
 
2. পর্যাপ্ত জল:
জার্মানির রূঢ়: রাইন নদীর পর্যাপ্ত মৃদু জল রূঢ় শিল্পাঞ্চলে ব্যবহার হয়।
 
দুর্গাপুর: দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেও দামোদর নদের জল ব্যবহৃত হয়।
 
3. স্থানীয় কয়লা:
জার্মানির রূঢ়: রূঢ় শিল্পাঞ্চলে রাইন নদী উপত্যকার উন্নত বিটুমিনাস কয়লা ব্যবহার করা হয়।
 
দুর্গাপুর: দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেও দামোদর উপত্যকার রানীগঞ্জ, আসানসোল ঝরিয়া কয়লাখনির উৎকৃষ্ট গন্ডোয়ানা যুগের কয়লা ব্যবহার হয়।
 
4. আমদানিকৃত লৌহ আকরিক:
জার্মানির রূঢ়: ফ্রান্সের লোরেন অঞ্চলের আমদানিকৃত আকরিক লোহার ওপর ভিত্তি করে লৌহ ইস্পাত শিল্প গড়ে উঠেছে।
 
দুর্গাপুর: দুর্গাপুরেও ওড়িশার গোরুমহিষানি,ময়ূরভঞ্জ কেওনঝড়ের আমদানিকৃত আকরিক লোহা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ব্যবহার হয়।
 
5. পরিবহনের দোলক নীতি:
জার্মানির রূঢ়: পরিবহনের দোলক নীতি অনুসারে  রাইন উপত্যকার কয়লা বোঝাই রেল ফিরতি পথে ফ্রান্সের আকরিক লোহা আমদানি করে।
 
দুর্গাপুর: দামোদর উপত্যকার রানীগঞ্জ ঝরিয়া কয়লা বোঝাই রেলও ফিরতি পথে উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ কেওনঝড়ের আকরিক লোহা আমদানি করে।
 
6. শিল্প সমূহ:
জার্মানির রূঢ়: এই শিল্পাঞ্চলে লৌহ ইস্পাত, ইঞ্জিনিয়ারিং রাসায়নিক শিল্প গড়ে উঠেছে।
 
দুর্গাপুর: এই শিল্পাঞ্চলেও বৃহৎ লৌহ ইস্পাত, সংকর ইস্পাত, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিমেন্ট সার শিল্প গড়ে উঠেছে।
 
এই জন্য জার্মানির রূঢ় শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে তুলনা করে পশ্চিমবঙ্গের দূর্গাপুরকে ভারতের রূঢ় বলা হয়।
 
Theme images by chuwy. Powered by Blogger.
close